বাংলার অভিনয় জগতে একটি অতি পরিচিত নাম সব্যসাচী চক্রবর্তী। বড় ও ছোটো এই দুই রকম পর্দাতেই তাঁর অবাধ যাতায়াত। নিজের অভিনয় দক্ষতায় জয় করে নিয়েছেন আট থেকে আশি সকলের মন। ১৯৯২ সাল থেকেই এই অভিনয় জীবনে তাঁর যাত্রা শুরু।
জন্ম ও শৈশব
সব্যসাচী চক্রবর্তী ৮ই সেপ্টেম্বর ১৯৫৬ সালে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতার নাম জগদীশ চক্রবর্তী ও মায়ের নাম মনিকা চক্রবর্তী। তাঁর মা তাকে সোহাগ করে ‘বেনু’ বলে ডাকতেন। আর সেই থেকেই তিনি আজও টলিপাড়ায় ‘বেনুদা’ নামে সুপরিচিত। ১৯৭৫ সালে তিনি দিল্লির এন্ডরূ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর দিল্লির হংস রাজ কলেজ থেকে বিএসসী ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি দিল্লিতেই এ এম আই পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ওয়াইল্ড লাইফ ফোটোগ্রাফি তাঁর হবি।
বৈবাহিক জীবন
সব্যসাচী চক্রবর্তী ১৯৮৬ সালে মিঠু চক্রবর্তীকে বিবাহ করেন। তিনিও বাংলা টিভির এক অতি পরিচিত মুখ। তাঁদের দুই সন্তান গৌরব চক্রবর্তী ও অর্জুন চক্রবর্তী। এরা দুজনেই বেশ জনপ্রিয় ও মেধাবী অভিনেতা।
অভিনয় জীবন
সব্যসাচী চক্রবর্তী জোছন দস্তিদারের ‘তেরো পার্বন’ সিরিয়াল থেকেই অভিনয় জগতে আত্মপ্রকাশ করেন এবং বাংলার ঘরে ঘরে এক পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন। এরপর ‘রুদ্রসেনের ডায়েরি’ নামক ধারাবাহিকে একটি গোয়েন্দা চরিত্রে অভিনয় করেন এবং জনপ্রিয়তা লাভ করেন। এরপর তিনি ‘অন্তর্ধান’, ‘চতুরঙ্গ’, ‘কাকাবাবু হেরে গেলেন’, ‘মহুলবনির সেরেং’, ‘কৈলাসে কেলেঙ্কারি’, ‘টীনটোরেটর যীশু’, ‘রক্তমুখি নীলা’, ‘রয়েল বেঙ্গল রহস্য’, ‘গোরস্থানে সাবধান’ প্রভৃতি বিভিন্ন অসাধারন চলচ্চিত্র আমাদের উপহার দিয়েছেন। শুধু সিনেমা নয় সেই সময়, একাকী অরণ্যে, উড়নচন্ডী, দ্বিরাগমন এর মত বেশ কিছু জনপ্রিয় ধারাবাহিকও উপহার দিয়েছেন। তিনি বাংলা সিনেমা ছাড়াও বেশ কিছু হিন্দি ও তামিল ছবিতেও অভিনয় করেছেন। যেমন স্কেচ, পুলি, সিংগম থ্রি, লিংগা প্রভৃতি।
চলচ্চিত্র তালিকা
অন্তর্ধান, ১৯৯২
শ্বেত পাথরের থালা, ১৯৯৪
সন্ধ্যাতারা(চরিত্রঃ সচিশ)
চতুরঙ্গ
সিনেমায় যেমন হয়, ১৯৯৪
তোমার রক্তে আমার সোহাগ, ১৯৯৫
রবিবার, ১৯৯৬
কাকাবাবু হেরে গেলেন?(চরিত্রঃ কাকাবাবু), ১৯৯৬
বাক্স রহস্য (চরিত্রঃ ফেলুদা), ১৯৯৬
রক্ত নদীর ধারে (চরিত্রঃ অবিনাশ), ১৯৯৬
দামু (চরিত্রঃ পটাই চর), ১৯৯৭
বিয়ের ফুল, ১৯৯৭
সম্প্রদান, ১৯৯৭
শেষ ঠিকানা (চরিত্রঃ ডাক্তার দেবগুপ্ত), ২০০০
আত্মীয় স্বজন
এক যে আছে কন্যা (চরিত্রঃ অঞ্জন), ২০০০
দেশ (চরিত্রঃ সাংবাদিক), ২০০২
অন্তর্ঘাত (চরিত্রঃ অবিনাশ), ২০০২
এক টুকরো চাঁদ (চরিত্রঃ কাকাবাবু), ২০০৩
বোম্বাইয়ের বোম্বেটে (চরিত্রঃ ফেলুদা), ২০০৩
খাকি (চরিত্রঃ মন্ত্রী দেওধর), ২০০৪
মহুলবনীর সেরেং (চরিত্রঃ সমেশ গোমেজ), ২০০৪
ওয়ারিশ, ২০০৪
শতাব্দির গল্প (চরিত্রঃ দাশু), ২০০৪
সংঘর্ষ , ২০০৪
নিশিযাপন (চরিত্রঃ নির্মল), ২০০৫
অবিশাস, ২০০৫
মন্ত্র, ২০০৫
দ্বিতীয় বসন্ত, ২০০৫
হার্বার্ট (চরিত্রঃ পুলিশ অফিসার), ২০০৬
বিবর, ২০০৬
দ্য নেমসেক (চরিত্রঃ অশ্বিমার বাবা), ২০০৬
মানুষ ভূত,২০০৬
বালিগঞ্জ কোর্ট (চরিত্রঃ উদয়ন), ২০০৭
কৈলাসে কেলেঙ্কারি (চরিত্রঃ ফেলুদা), ২০০৭
লাল-কালো (চরিত্রঃ স্পাইডার), ২০০৭
রক্তমুখি নিলা,২০০৮
ভালোবাসা ভালোবাসা, ২০০৮
লাহোরে (চরিত্রঃ সিকান্দার হায়াত খান), ২০০৮
টিনটোরেটর যিশু (চরিত্রঃ ফেলুদা), ২০০৮
অংশুমানের ছবি (চরিত্রঃ বিকাশরঞ্জন), ২০০৯
ফ্রেন্ড, ২০০৯
পিয়ালির পাসওয়ার্ড (চরিত্রঃ সমর), ২০০৯
পাখি, ২০০৯
মল্লিক বাড়ি, ২০০৯
অনুভব, ২০০৯
033 (চরিত্রঃ সান্তিয়াগো), ২০০৯
থানা থেকে আসছি, ২০০৯
ছ-এ-ছুটি (চরিত্রঃ সব্যসাচি চক্রবর্তী), ২০১০
শুকনো লঙ্কা (চরিত্রঃ জয় সুন্দর সেন), ২০১০
ল্যাবরেটরি, ২০১০
গোরস্থানে সাবধান (চরিত্রঃ ফেলুদা), ২০১০
সিস্টেম (চরিত্রঃ দেলোয়ার শেখ), ২০১১
রয়েল বেঙ্গল রহস্য (চরিত্রঃ ফেলুদা), ২০১১
আজব প্রেম এবং একটি বাসের গল্প, ২০১২
FLOP-ই, ২০১২
ভুতের ভবিষ্যত, ২০১২
চলো পটল তুলি (চরিত্রঃ অশ্বিনী কুমার),২০১২
বিক্রম সিংহ, দ্য লায়ন ইজ ব্যাক (বিশেষ আবির্ভাব), ২০১২