নিজস্ব প্রতিনিধি ২০ নভেম্বর ২০১৯
ছায়া দেবী
ছায়া দেবী বাংলা চলচ্চিত্রের একজন খ্যাতনামা অভিনেত্রী। তিনি বাংলা, হিন্দি সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষার শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তিনি বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের মধ্যে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। তাঁর প্রথম অভিনীত ছবি ‘সোনার সংসার’। এরপর ‘বিদ্যাপতি’ সিনেমায় অভিনয় করেই তিনি প্রচুর জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন।
জন্ম ও পরিবার
ছায়া দেবীর জন্ম গ্রহন করেছিলেন ভাগলপুরে। তাঁর পিতা ছিলেন হারাধন গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি অপর অভিনেতা অশোক কুমারের স্ত্রী শোভা গঙ্গোপাধ্যায়ের তুতো বোন আর এই সূত্রেই অভিনয় জগতের সাথে তাঁর সূক্ষ্ম যোগাযোগ ছিল। পরবর্তীকালে তিনি রাঁচীর এক শিক্ষক বুদ্ধদেব চট্টোপাধ্যায়কে বিবাহ করেন।
শিক্ষা জীবন
ছায়া দেবী তাঁর শিক্ষা জীবন শুরু করেছিলেন আদমপুরের মসকন্দ গার্লস হাই স্কুলে।পরবর্তীকালে তাঁর পিতার বদলি হয় দিল্লীতে। সেজন্য তিনি দিল্লীর ইন্দ্রপ্রস্থ গার্লস হাই স্কুলে তাঁর অধ্যয়ন শেষ করেন। তিনি যখন বিবাহ করেছিলেন, তখন তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র এগারো বছর। এরপর ছায়া দেবী তাঁর পিতার সাথে যখন কলকাতায় আসেন, তখন তিনি দশম শ্রেনীর ছাত্রী।
অভিনয় জীবন
ছায়া দেবী তাঁর অভিনয় জীবনে প্রথম আত্মপ্রকাশ করেন ১৯৩৬ সালে ‘সোনার সংসার’ সিনেমাটিতে অভিনয় করে। যদিও সেটি তাঁর প্রথম সিনেমা ছিল, তবে তিনি ১৯৩৮ সালে ‘বিদ্যাপতি’ সিনেমাটিতে অভিনয় করেই বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন। প্রধান নায়িকার চরিত্র ছাড়াও অন্যান্য বিবিধ চরিত্রে তাঁর অত্যন্ত সৃষ্টিশীল অভিনয় সকলের মন ছুঁয়ে যায়। ১৯৬২ সালে ‘অতল জলের আহবান’ সিনেমাটিতে অভিনয় করে, ছায়া দেবী দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছিলেন।ওই সিনেমায় তিনিন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মায়ের ভূমিকায় অনবদ্য অভিনয় করেছিলেন। এরপর ১৯৬৩ সালে ‘দেয়া নেয়া’ –তে উত্তম কুমারের একজন অসহায় মায়ের ভুমিকায় অভিনয় করেছিলেন। ওই বছরেই আরও একটি সিনেমা ‘সাত পাকে বাঁধা’ তে সুচিত্রা সেনের একজন নির্মম ,হৃদয়হীন মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। ছায়া দেবী উত্তম কুমারের মায়ের ভূমিকায় একাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন। এরপর ১৯৫৭ সালে ‘অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি’ সিনেমাটিতে তিনি হেন্সম্যান অ্যান্টনি বা উত্তম কুমারের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এরপর একে একে ‘আপনজন’ ‘পদি পিসির বরমি বাক্স’ সিনেমায় অসাধারন অভিনয় করেন। পরবর্তীকালে ‘আপনজন’ সিনেমাটি “বেস্ট ফিচার ফিল্ম ইন বেঙ্গল” বিভাগে জাতীয় পুরস্কার পায়।
অভিনীত চলচ্চিত্রসমূহ
১৯৩৬ সালে সোনার সংসার, রজনী
১৯৩৭ সালে বিদ্যাপতী, রাঙ্গা বউ
১৯৩৮ সালে হাল বাংলা
১৯৩৯ সালে বামনাবতার, যখের ধন, দেবজানী, জনক নন্দিনি, রিক্তা
১৯৪০ সালে অভিনেত্রী, হার জিত
১৯৪১ সালে শ্রী রাধা
১৯৪২ সালে জীবন সঙ্গিনী, অভয়ের বিয়ে, চৌরঙ্গি
১৯৪৫ সালে বন্দিতা
১৯৪৭ সালে বার্মার পথে, ঝড়ের পর
১৯৪৮ সালে ধাত্রী দেবতা, অনির্বাণ
১৯৪৯ সালে আভিজাত্য, কুয়াশা
১৯৫০ সালে শ্রী তুলসীদাস,
১৯৫১ সালে রত্নদীপ
১৯৫৬ সালে রাত ভোরে, শঙ্কর নারায়ণ ব্যাঙ্ক, দানের মর্্যাদা, শুভলগ্ন, ত্রিজামা
১৯৫৭ সালে মায়াবাজার
১৯৫৮ সালে মর্মবাণী
১৯৫৯ সালে গলি থেকে রাজপথ
১৯৬০ সালে কুমকুম রেখা
১৯৬১ সালে পঙ্কতিলক, মানিক, অগ্নি সংস্কা্র, সপ্তপদী
১৯৬২ সালে দক্ষযঞ্জ, কাঁচের স্বর্গ, অবশেষে, অতলজলের আহবান, রক্ত পলাশ, ১৯৬৩ সালে প্রভু প্রতিষ্ঠা, কাঞ্চন কন্যা, দেয়া নেয়া, নির্জন সৈকতে, সাত পাকে বাঁধা, উত্তর ফাল্গুনী
১৯৬৫ সালে মুখুজ্যে পরিবার, অন্তরাল, আরোহী কাঁচ কাটা হীরে, সূর্যতপা, থানা থেকে আসছি
১৯৬৬ সালে নবরাত্রি, গল্প হলেও সত্যি , মমতা
১৯৬৭ সালে মহাশ্বেতা, অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি, হাটে বাজারে
১৯৬৮ সালে তিন অধ্যায়, আপঞ্জন, বাঘিনী
১৯৬৯ সালে আরোগ্য নিকেতন, পিতা পুত্র
১৯৭০ সালে কলঙ্কিত নায়ক, রাজকুমারী, মুক্তিশান, সমান্তরাল
১৯৭১ সালে কুহেলি
১৯৭২ সালে হার মানা হার, শেষ পর্ব, পদি পিসির বর্মি বাক্স
১৯৭৪ সালে দেবী চৌধুরানি, আলোর ঠিকানা
১৯৭৫ সালে স্বয়ংসিদ্ধা, হারানো প্রাপ্তি নিরুদ্দেশ, ফুল শয্যা
১৯৭৬ সালে জ্যোতি, হারমোনিয়াম, সেই চোখ
১৯৭৭ সালে কল্পনা, প্রক্সি, প্রতিমা, এই পৃথিবী পান্থনিবাস, বাবা তারকনাথ, এক যে ছিল দেশ, বাবু মশাই, আলাপ
১৯৭৮ সালে ধনরাজ তামাং, নদী থেকে সাগরে, অরুন বরুন ও কিরনমালা
১৯৮১ সালে কলঙ্কিনি, সুবর্নলতা, মাণিকচাঁদ, সূর্যসখী
১৯৮২ সালে পিপাসা, রাজবধূ
১৯৮৩ সালে শৃঙ্খল, রঙ বেরঙ্গী, প্রায়শ্চিত্ত
১৯৮৪ সালে রাশিফল, লাল গোলাপ, সীমন্তরাগ
১৯৮৭ সালে স্বর্নমনির ঠিকানা, প্রতিকার
১৯৮৮ সালে বোবা সানাই